দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার বুলাকিপুর ইউপি’র রঘুনাথপুর দিঘীপাড়া, ভালাইন, সিংগানালা আদিবাসী গ্রামে গত ৬ ও ৮ জুন তারিখে সন্ত্রাসীদের হামলার প্রতিবাদে আজ সকাল ১১টায় দিনাজপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ ও আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতি যৌথভাবে মানববন্ধন করে এবং মানবন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে। মানবন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদ দিনাজপুর জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক কমলাকান্ত সরেন, আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি অধ্যাপক গনেশ সরেন, আদিবাসী ছাত্র পরিষদ দিনাজপুর জেলা সভাপতি নরেশ হেমব্রম, ছাত্র নেতা নিরোলা মার্ডী প্রমুখ।
মানববন্ধন থেকে আদিবাসীদের গ্রামে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বিচার; আদিবাসীদের লুন্ঠিত মালামাল দ্রুত উদ্ধার করে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ; ক্ষতিগ্রস্থদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান; মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত আদিবাসীদের নিঃশর্ত মুক্তি প্রদান; আদিবাসীদের গ্রাম ও সম্পদ রক্ষাসহ নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ আদিবাসীদের প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য ও নির্যাতন-নিপীড়ণ বন্ধের দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।
জানা গেছে, দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার বুলাকিপুর ইউপি’র রঘুনাথপুর দিঘীপাড়া, ভালাইন, সিংগানালা আদিবাসী গ্রামে গত ৬ জুন ২০১৩ তারিখে ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসীরা বর্বর হামলা চালিয়ে আদিবাসীদের ঘরবাড়িতে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও ঘরের দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিসপত্রসহ গৃহপালিত পশু (গরু, ছাগল, ভেড়া) লুটপাট করে এবং আদিবাসী নারী-পুরুষদের মারপিট করে। সন্ত্রাসীদের এই বর্বর ঘটনা ঘটার রেশ যেতে না যেতেই আবারো ৮ জুন ২০১৩ তারিখে রঘুনাথপুর দিঘীপাড়ার নিকোলাস মুরমু’র বাড়িসহ আদিবাসীদের ৩টি বাড়ি সন্ত্রাসীরা পুড়িয়ে দিয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশ প্রশাসন সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার না করে উল্টো রাবন, নরেন, কমলেস, লক্ষীরাম, কাটিসহ ৭ জন নির্দোষ আদিবাসীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করেছে। এর ফলে বর্তমানে অত্র এলাকার আদিবাসীদের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং পুনরায় সন্ত্রাসী আক্রমণ, পুলিশি হয়রানি ও গেফতারের ভয়ে আক্রান্ত গ্রামগুলো এখন পুরুষ শূণ্য হয়ে পড়েছে। ফলে আদিবাসী পরিবারগুলো বিশেষ করে নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে এবং হাটে বাজারেসহ স্কুল কলেজেও আদিবাসীরা যেতে ভয় পাচ্ছে।
Filed under: আদিবাসী সংবাদ, জাপ একটিভিটি সংবাদ |
Leave a comment